Sunday, August 3, 2025

কাবায় ফিলিস্তিনি পতাকা উত্তোলন করায় হজযাত্রী আটক, নিন্দার ঝড়

আরও পড়ুন

সৌদি আববের মক্কার পবিত্র গ্র্যান্ড মসজিদে কাবার পাশে ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এক মিসরীয় হজযাত্রী আটক হয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই।

রোববার (২৭ জুলাই) সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত করার অভিযোগ উঠেছে সৌদি সরকারের বিরুদ্ধে। ওই ব্যক্তি গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ ও ক্ষুধার অবসানের দাবি জানিয়ে ফিলিস্তিনের পতাকা তুলে ধরেছিলেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ওই ব্যক্তি কেঁদে কেঁদে বলছেন, ‘ও ইসলামে!’ এটি ঐতিহাসিকভাবে মুসলিমরা বিপদে পড়লে তাদের দুর্দশা প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত একটি শব্দবন্ধ। আবেগঘন এই দৃশ্যে ওই হজযাত্রী চিৎকার করে বলেন, ‘গাজার শিশুরা মারা যাচ্ছে। হে মুসলমানরা!’ এরপরই সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে আটক করেন। 

আরও পড়ুনঃ  গাজায় সবচেয়ে খারাপ রূপে ছড়িয়ে পড়ছে দুর্ভিক্ষ

এ ঘটনার পর ইসলামের পবিত্র স্থানগুলোতে সৌদি সরকারের রাজনৈতিক অভিব্যক্তির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সৌদি কর্তৃপক্ষের দাবি, হজ ও ওমরাহর সময় কোনো ধরনের স্লোগান, পতাকা বা রাজনৈতিক প্রতীক নিষিদ্ধ রাখা হয়, যাতে ইবাদতের পবিত্রতা বজায় থাকে।

তবে সমালোচকরা বলছেন, এই নীতির আড়ালে সৌদি সরকার মূলত ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতির প্রকাশ দমন করছে এবং মুসলিম সংহতির কণ্ঠরোধ করছে।

মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, তায়েফবাসীর জন্য যে দোয়া করেছিলেন মহানবী (সা.) এর আগেও, ২০২৩ সালে একজন ব্রিটিশ হজযাত্রীকে আটক করা হয়, কারণ, তিনি ফিলিস্তিনের পতাকার রঙের তজবিহ ও একটি সাদা কেফিয়েহ (আরবীয় স্কার্ফ) পরেছিলেন।

আরও পড়ুনঃ  মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি বার্সেলোনার পর শোক জানাল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মক্কার বাইরেও সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ইসরায়েলের সমালোচনা কিংবা গাজার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করায় দেশটির নাগরিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার দাবি, ২০১৭ সালে মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদি যুবরাজ হওয়ার পর থেকে রাজতন্ত্রের সমালোচনা কিংবা সৌদি পররাষ্ট্রনীতির বিরোধিতা করা যে কোনো শান্তিপূর্ণ বক্তব্যের জন্য বহু নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধ চলমান থাকা অবস্থায় মক্কার পবিত্র মসজিদে এই গ্রেপ্তারের ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সৌদি আরবে এখন যেন ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানানোই অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ