Sunday, August 3, 2025

অন্তর্বর্তী সরকারের ‘এক্সিট পলিসি’ নিয়ে চিন্তা করার সময় এসেছে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

আরও পড়ুন

যেকোনো অন্তর্বর্তীকালীন বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সর্বদা তার এক্সিট পলিসি (নিষ্ক্রমণ পদ্ধতি) সম্বন্ধে চিন্তা করা উচিত বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, এই সরকারেরও (অন্তর্বর্তী সরকার) সময় এসে গেছে এক্সিট পলিসি চিন্তা করার। একইসঙ্গে যেটুকু সময় আছে, এর ভিতর দিয়ে এই সরকার আর কী অর্জন করে বের হয়ে যেতে চায়– জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের মধ্য দিয়ে সেইটাও বলার সময় এসেছে।

আজ বুধবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে ‘ডেমোক্রেসি ডায়াস বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আমার পিসিমা একটা কথা শিখিয়েছেন, ‘যতখানি খেতে পারবে, অতখানি কামড় দিও। যেটুকু চাবাতে পারবে না, অত কিছু মুখে নিও না।’ আপনি কতখানি সংস্কার করতে পারবেন এবং কতখানি সংস্কার এই সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারবেন– সেইটা মনে রাখতে হবে। চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে অনেক সংস্কার অসম্পূর্ণ থাকবে, অনেক সংস্কার পরের সরকার করবে। এইটা আপনাকে মেনে নিয়ে আগামীতে ধারাবাহিকতার ভেতরে থাকতে হবে। এইটা না করলে যদি আমি না করি, তাহলে ‘সংস্কার’ ‘সংস্কার’ বলে আমি আবার বিভিন্ন অসংস্কারী কাজের ভিতরে যুক্ত হয়ে যেতে পারি। ‘সংস্কারবাদী’ শব্দটা আবার বাজারে ফিরে এসেছে। এক–এগারোর পরে এটা খারাপ হয়ে গেছিল। ইদানিংকালে সংস্কারবাদী বললে এখন আর অতো খারাপ বলে না। এখন অবশ্য ফ্যাসিবাদী বলে।

আরও পড়ুনঃ  প্রথমে পুলিশ নিয়ে বাসায়, পরে হুমকি দিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেন বৈষম্যবিরোধী নেতারা

তিনি বলেন, আগের তিনটা যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল, তাদের প্রত্যেকেরই একটা নিষ্ক্রমণ পথ ছিল। অর্থাৎ ‘এক্সিট পলিসি’ যেটাকে বলে। জিয়াউর রহমান যখন দায়িত্ব নিয়েছেন, তখন উনার দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। পঞ্চম সংশোধনী বা অন্যান্য বিষয় এগুলোকে বৈধতার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয়নি। পার্লামেন্ট কাজ করেছে উনার পক্ষে। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টি দিয়ে অষ্টম সংশোধনী পর্যন্ত যে সমস্ত বিষয় ছিল, এটাকে উনি বৈধতা দিতে পেরেছেন। এক–এগারোর সরকারের দিকে তাকালে দেখা যায়, যেই সরকারটি এসেছিল, সেই সরকারটি কিন্তু ওই ফখরুদ্দিন আহমদের সরকারের অনুগমনে হয়েছিল। সেহেতু উনাদের বৈধতার ক্ষেত্রে কিন্তু খুব বেশি সমস্যা হয়নি। বর্তমান সরকার যে কাজকর্মগুলো করেছে, আগামী সরকার সেগুলোকে সম্পূর্ণভাবে বৈধতা দিবে কিনা– এই বিষয় কিন্তু এখনো সামনে রয়ে গেছে।

আরও পড়ুনঃ  ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশ: চরমোনাই পীর প্রধান, জামায়াত নেতা বিশেষ অতিথি

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, শুধু নির্বাচনের তারিখ নিয়ে আমরা যে চিন্তিত, সেটা না। কী কী আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এই সরকারকে আমরা নিয়ে এসেছিলাম, সেইটা সমাপনের ক্ষেত্রে কী কী করে যাচ্ছেন এবং আগামী সরকারের জন্য কী কী রেখে যাচ্ছেন– এই স্বচ্ছ বক্তব্য দিতে হবে। একটা ‘এক্সিট টাস্ক রিপোর্ট’ করার একটা সময় এসে গেছে।

সভায় আরও অংশ নেন বিশিষ্ট নাগরিক, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বক্তারা সুশাসন, গণতন্ত্র ও নীতিনির্ধারণে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়-দায়িত্ব ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা করেন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ